জুহার কী খবর!
অন্যের জন্য গর্ত খুড়লে...
জুহা একদিন এক কবরস্তানে গেল। গিয়ে দেখল, এক মহিলা একটি কবরের কাছে বসে কাঁদছে। জুহা জিজ্ঞেস করল, কে মারা গেছে? মহিলা বলল, আমার স্বামী। জুহা জিজ্ঞেস করল, সে কী করত? মহিলা বলল, মাইয়্যেতের জন্য কবর খোঁড়ার কাজ করত।
জুহা বলল, কথায় আছে না, অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেকেই সে গর্তে পড়তে হয়! আপনার স্বামীর বেলায়ও তাই ঘটেছে। আপনি ওর জন্য কেঁদে সময় নষ্ট করবেন না। আপনি বরং ওর হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন...!
পরের ট্রেনে আসো
জুহা রেলে চড়ে কোথাও যাচ্ছিল। ট্রেন যখন দ্রুতবেগে ছুটতে আরম্ভ করল তখন জুহার টুপিটি আচমকা উড়ে পথে পড়ে গেল। জুহা তৎক্ষণাৎ পকেট থেকে এক দিরহাম ফেলে দিয়ে বলল, ওহে টুপি! এই দিরহামটি নাও এবং অন্য একটি ট্রেনে চড়ে পরের স্টেশনে এসে আমাার সঙ্গে মিলিত হও!
নাকি আরো দূরে যেতে হবে?
জুহার স্ত্রী একদিন রাগ করে বলল, আমার সামনে থেকে দূর হয়ে যাও। আমি আর তোমার চেহারা দেখতে চাই না।
জুহা তক্ষুণি পোশাক পরে গাধার পিঠে চড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে যখন শহরের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছল তখন তার এক পড়শীর সঙ্গে দেখা। জুহা তাকে বলল, যদি নিরাপদে বাড়ি পৌঁছতে পারো তাহলে কারো মাধ্যমে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করো, যতখানি দূরে এসেছি তাতেই চলবে, নাকি আরো দূরে যেতে হবে?!
উল্টো চলা
ছোটবেলায় জুহার অভ্যাস ছিল, বাবা যা বলে তার উল্টো চলা। বাবা তার এই বদঅভ্যাসটার বিষয়ে ভালোই জানতেন। তাই তিনি করতেন কী, যে কাজ তাকে করতে বলবেন ঠিক সেটার কথা না বলে উল্টোটা বলতেন। যাতে শেষপর্যন্ত সঠিকটাই তার কাছ থেকে উদ্ধার করা যায়।
মনে করো, বাবা বলতে চান জুহা এখন বাইরে যেয়ো না। তো বলতেন, জুহা এখন বাইরে যাও। জুহা বাবার কথার বিপরীতটাই করত। অর্থাৎ বাইরে না গিয়ে বরং ঘরে বসে থাকত।
একবার হল কী, জুহা ও তার বাবা বাজার থেকে ফিরছিলো। সামনেই একটা ছোট্ট নদী। নদীর উপর কাঠের পোল। বাজার থেকে আনা সমস্ত সদাই ছিল গাধার পিঠে। এ অবস্থায় গাধাকে তো নৌকায় পার করা যাবে না। যেতে হবে পোলের উপর দিয়ে।
বাবা বললেন, জুহা তুমি গাধাটাকে নিয়ে নৌকায় ওঠো। আমি পোলের উপর দিয়ে আসছি।
জুহা তো উল্টোটাই করবে। সে গাধা নিয়ে পোলের উপর দিয়ে রওয়ানা হল। বাবা উঠলেন নৌকায়।
জুহা যখন পোলের উপর দিয়ে যাচ্ছিল তখন গাধার পিঠে থাকা আটার বস্তাটা একদিকে হেলে পড়ল। জুহার বাবার ভয় হল, বস্তাটা না নদীতে পড়ে যায়। তাই নৌকা থেকে তিনি চিৎকার করে বললেন, বস্তাটা কোনো দিকে কাত হয়নি। নদীতে পড়ারও ভয় নেই। তুমি ওটা সোজা করো না।
জুহা বাবার দিকে ফিরে বলল, বাবা, সবসময় আমি আপনার কথার বিপরীত করি। আজ আমি আপনার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।
অতএব জুহা আর বস্তাটা সোজা করল না। ফল যা হবার তাই হল। বস্তাটা গাধার পিঠ থেকে পড়ে নদীতে তলিয়ে গেল!
বন্ধুরা, দেখলে তো উল্টো চলার বিপদ!