মিষ্টি খাওয়া
বাসেম ছোট্ট ছেলে। ঠিক তোমাদের মত। সে মিষ্টি খেতে খুব ভালবাসে। যে কোনো মিষ্টি। ওর আম্মু তাই মাঝেমধ্যেই ওর জন্য বিভিন্ন মিষ্টি খাবার তৈরি করেন।
একদিনের ঘটনা। বাসেম দুপুরে মাদরাসা থেকে ফিরে বলল, আম্মু! আমি হালুয়া খাব। আমার জন্য হালুয়া বানাও।
আম্মু বললেন, এখন তো আমি দুপুরের খাবার রান্না করছি। রাতে তোমাকে হালুয়া বানিয়ে খাওয়াব কেমন!
সন্ধ্যার দিকে বাসেমের আম্মু ময়দা, সুজি ডিম ইত্যাদি নিয়ে বসলেন হালুয়া বানাতে। একটু পর বাসেম ঘ্রাণ পেয়ে দৌড়ে এল রান্নাঘরে। বলল, আম্মু! আম্মু! তুমি কি হালুয়া বানাচ্ছো! আমাকে এখনই এক টুকরো দাও না!
ওর আম্মু মুচকি হেসে বললেন, আরে বেটা! হালুয়া তো এখনো তৈরি হয়নি। মাত্রই চড়িয়েছি। নেড়ে নেড়ে শক্ত করতে হবে। এরপর ছুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে কাটব । ভালোভাবে ঠাণ্ডা হবে। তারপর খেতে পারবে। তুমি অপেক্ষা করো।
সব শুনে বাসেম বলল, আচ্ছা আম্মু তৈরী হলেই আমাকে ডেকো কিন্তু! এই বলে বাসেম আবার চলে গেল।
আধ ঘণ্টা পরই সে শুনতে পেল আম্মুর ডাক। বাসেম! বেটা জলদি আসো। হালুয়া তৈরী।
বাসেম দৌড়ে এল। ওর আম্মু একটা পিরিচে দুই টুকরো হালুয়া ওকে তুলে দিলেন। বাসেম খেয়ে বলল, আম্মু অনেক মজা হয়েছে। আরেক টুকরা দেওয়া যাবে? আম্মু বললেন, না বাবা, বাকিটা সকালে খাবে। এখন দাঁত ব্রাশ করে ঘুমুতে যাও। বাসেম মন খারাপ করে চলে গেল।
* * *
রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ল বাসেম বিছানা ছেড়ে উঠল। আস্তে আস্তে রান্নাঘরে গেল। চারদিকে অন্ধকার। রান্নাঘরের বাতিও বন্ধ। বাসেম হালুয়া খাওয়ার জন্য আস্তে আস্তে ফ্রিজের কাছে গেল। রাতে আম্মুকে ফ্রিজেই হালুয়া রাখতে দেখেছে।
হঠাৎ পায়ের সাথে লেগে একটা বাসন পড়ে যায়। এতে জোরে আওয়াজ হয়। আর ওর আম্মুর ঘুমও ভেঙে যায়।
বাসেম ভয়ে রান্নাঘরে দরজার পেছনে গিয়ে লুকাল। ওর আম্মু বিছানা থেকে উঠে রান্নাঘরের দিকে এলেন। বাতি জে¦লে দেখলেন, ফ্রিজ খোলা আর বাসেম লুকিয়েছে দরজার পিছনে।
ওর আম্মু বুঝে ফেললেন, কী ঘটনা এবং কেন বাসেম এত রাতে এখানে ।
এবার বাসেমকে ওর আম্মু বললেন, কোনো কিছুতেই লোভ করতে নেই বেটা। সকাল হলেই তো তুমি হালুয়া খেতে পারতে।
আর কখনো এভাবে রাতে উঠবে বলো? বাসেম দু-দিকে মাথা নাড়ল, না আম্মু। আর কখনো এমন করব না।
‘খেতে ইচ্ছে করলে আমাকে ডাকতে’ এই বলে ওর আম্মু ফ্রিজ খুলে আরেক টুকরা হালুয়া বের করে ওকে দিলেন। বললেন, যাও। এটা খেয়ে আবার ব্রাশ করে ঘুমিয়ে পড়ো। বাসেম ভদ্র ছেলের মত ঘরে ফিরে গেল।